প্রাচীন যুগের বাংলার কবি এবং তাদের সাহিত্যকর্ম
|
{cname}
সাহিত্যিকদের নামের উপর ক্লিক করুন
{name}
কবি পরিচিতি
{birth}
সাহিত্যকর্ম
{work}
|
» চর্যাপদ বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন যুগের একমাত্র নিদর্শন। » এর মূল নাম 'চর্যাচর্যবিনিশ্চয়'। » চর্যাপদ বৌদ্ধ সহজিয়াদের সাধন সঙ্গীত। » বৌদ্ধ পণ্ডিতগণ নিজেদের সাধনার অংশ হিসেবে কাব্যচর্চার যে ধারা তৈরি করেছিলেন তারই একটি বর্ণাঢ্য নজির পাওয়া গেছে এই সংকলনে। » চর্যাপদের আবিষ্কর্তা মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী। » ১৯০৭ সালে তিনি দুর্গম পথ অতিক্রম করে তৃতীয় বারের মতো নেপাল যান। » সেখানে রাজদরবারের গ্রন্থাগারে তিনি খুঁজে পান এই অমূল্য পাণ্ডুলিপি। » শাস্ত্রী মহাশয় একই সঙ্গে নিয়ে আসেন আরো তিনটি পুঁথি সরহপাদ ও কৃষ্ণ পাদের দোহা এবং ডাকার্নব। » চারটি পুঁথি একত্রিত অবস্থায় তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় ১৯১৬ সালে 'হাজার বছরের পুরনো বাংলা ভাষায় বৌদ্ধগান ও দোহা' নামে। » প্রকাশক বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ। চারটি পুঁতির মধ্য কেবল চর্যাপদের পুঁতিটিরই ভাষা বাংলা। » অন্য তিনটি অর্বাচীন অপভ্রংশে রচিত।
» পুঁথিতে চর্যাপদের নাম ছিল চর্যাচর্যবিনিশ্চয়। » শাস্ত্রী মহাশয় যে পুঁথিটি আবিষ্কার করেছিলেন, তাতে মনিদত্ত নামক পন্ডিতের সংস্কৃত টীকা ছিল। » মোট ৫১ টি পদের মধ্যে টীকাকার মুনিদত্ত ১১ সংখ্যক পদের ব্যাখ্যা করেননি। » এছাড়া পুঁথির পাতা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ২৪, ২৫ ও ৪৮ সংখ্যক পদের পুরোটাই এবং ২৩ সংখ্যক পদের শেষাংশ পাওয়া যায়নি। » তাই মুনিদত্তের টীকা সম্মলিত হরপ্রসাদ কর্তৃক আবিষ্কৃত গ্রন্থে পাওয়া গেছে মোট সাড়ে ছেচল্লশটি পদ। » অবশ্য পরে পণ্ডিতগণ তিব্বতি অনুবাদ অবলম্বনে বাকি পদগুলোও পুনরুদ্ধার করেছেন। » চর্যাপদের তিব্বতী অনুবাদকের নাম কীর্তিচন্দ্র তিব্বতী অনুবাদ আবিষ্কার করেন ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী ১৯৩৮ সালে।
» ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় ১৯২৬ সালে তাঁর বিখ্যাত Origin and Development of the Bengali Language গ্রন্থে চর্যার ভাষাতাত্ত্বিক পর্যালোচনা করেন। » ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ চর্যাপদের ধর্মমত নিয়ে আলোচনা করেন ১৯৭২ সালে। » বাঙালি পণ্ডিতগণ ভাষা বৈশিষ্ট্য বিচার করে প্রমাণ করেছেন যে, চর্যাপদ বাংলা ভাষারই আদি নিদর্শন। » অবশ্য হিন্দী, অহমিয়া, উরিয়া প্রভৃতি ভাষাভাষীরা নিজ নিজ ভাষার আদি নিদর্শন হিসেবে চর্যাপদের উপর দাবি জানিয়েছে। » যেহেতু হাজার বছর আগে বাংলাসহ এই ভাষাগুলো প্রায় অভিন্ন উৎস থেকে আবির্ভূত হচ্ছিল, সেহেতু এসব দাবিকে অযৌক্তিক বলা যাবে না।
» চর্যাপদের ভাষায় ৫ টি ভাষার মিশ্রণ পরিলক্ষিত হয়। » তা হলো বাংলা, হিন্দি, মৈথিলী, অসমীয়া ও উরিয়া। » ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় চর্যার ভাষা বৈশিষ্ট্য বিচার করে মত দিয়েছেন যে, পদগুলো হাজার ৯৫০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১২০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে রচিত হয়েছিল। » ড. শহীদুল্লাহ ভাষা ও অপরাপর লক্ষণের উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন চর্যার রচনাকাল ৬৫০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১২০০ খ্রিস্টাব্দ। » চর্যাপদের কবির সংখ্যা ২৪ জন। » এঁরা হলেন লুই, কুক্কুরী, বিরুআ, গুন্ডরী, চাটিল, ভুসুক, কাহ্ন, কামলি, ডোম্বী, শান্তি, মহিত্তা, বীণা, সরহ, শবর, আজদেব, ঢেন্ডণ, দারিক, ভাদে, তাড়ক, কঙ্কণ, জঅনন্দি, ধাম, তন্ত্রী, লাড়ীডোম্বী। এঁদের বেশির ভাগই বিখ্যাত দৌদ্ধ গুরু-শিষ্য পরম্পরা চৌরাশি সিদ্ধা এর অন্তর্গত। » তাই নামের শেষে যুক্ত হয়েছে গৌরবসূচক উপাধি 'পাদনাম' বা সংক্ষেপে 'পা'। » চর্যাপদের প্রধান কবি কাহ্নপা। » সংকলনটিতে তাঁর ১৩ টি পদ গৃহীত হয়েছে। » ভুসুকুপা সংখ্যার বিচারে চর্যার দ্বিতীয় প্রধান কবি। » তাঁর পদের সংখ্যা ৮ টি। চর্যাপদের প্রথম পদ লুইপার রচনা। » লুইপা প্রথম বাঙালি কবি। ২৮ ও ৫০ সংখ্যক পদের রচয়িতা শবরীপা পর্যার শ্রেষ্ঠ কবি।
|
Copyright © Sabyasachi Bairagi
|